ব্লগিং ? আমাকে কি জানতে হবে? ব্লগিং করে লাভ কি?

ব্লগিং সম্পর্কে কিছু ধারনা। আজকে আমি যেই বিষয় গুলি নিয়ে আলচনা করব, সেগুলি হলঃ
১. ব্লগিং কি?
২. আমাকে কি জানতে হবে?
৩. ব্লগিং করে লাভ কি?

আমরা আজকে এই তিনটি বিষয় সম্পর্কে ধারনা নেয়ার চেস্টা করব। আশা করি এই ক্লাসের মাধ্যমেই আপনি ব্লগিং সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা পাবেন।

১. ব্লগিং কিঃ

ব্লগিং হল এমন একটি বিষয়, যেখানে আপনাকে শুধু একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগে লিখতে হবে। সাধারনত যেই ওয়েবসাইটে ব্লগিং করা হয় সেটাকে ওয়েবসাইট না বলে ব্লগ বলা হয়। আমরা পরবর্তী ক্লাশে ব্লগ সম্পর্কে জানব। ব্লগে আপনার লেখালেখিকেই মূলত ব্লগিং বলা হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ব্লগে কি নিয়ে লেখা হয়? উত্তরঃ একজন ব্লগার যা জানেন তাই ব্লগে লিখে থাকেন, সেটা যেকোনো বিষয় নিয়ে হতে পারে। যেমনঃ ভ্রমন সম্পর্কিত তথ্য, প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য, বই সম্পর্কিত তথ্য, মুভি বিষয়ক তথ্য, কম্পিউটার বিষয়ক তথ্য, ইত্তাদি। আবার অনেক ব্লগার আছেন যারা শুধুমাত্র তার নিজের দৈনন্দিন কারযবলি নোট করে থাকেন। এক কথায় কোন ব্লগে লেখালেখিকেই ব্লগিং বলা হয়। ব্লগিং আবার দুই ধরনের হয়,
ক. প্রফেশনাল ব্লগিং,
খ. গেস্ট ব্লগিং।

প্রফেশনাল ব্লগিং: প্রফেশনাল ব্লগিং হল, নিজস্ব একটা ব্লগ তৈরি করে সেখানে ব্লগিং করা। প্রফেশনাল ব্লগাররা নিজস্ব ডোমেইন ও হস্টিং কিনে তার নিজস্ব ব্লগিং প্লাটফর্ম তৈরি করেন। মূলত এটাই আদর্শ ব্লগিং ব্যবস্থা।

গেস্ট ব্লগিং: গেস্ট ব্লগিং হল অন্য কারো ব্লগে গিয়ে লেখা। ইন্টারনেটে অনেক ব্লগ আছে যেখানে, আপনি লেখার সুযোগ পাবেন। আর আপনার লেখা থেকে যতটুকু আয় হবে তার থেকে আপনি একটা অংশ পাবেন।

এই হল ব্লগিং। আশা করি বুঝতে পেরেছেন। আরও কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করুন।
২. আমাকে কি জানতে হবেঃ

ব্লগিং শুরু করার আগে আপনাকে যা জানতে হবে তা হল, ১. যে ভাষায় ব্লগিং করবেন (ইংরেজি হলেই বেস্ট), ২. রাইটিং স্পিড, ৩. ধৈর্য।
এই তিনটি বিষয় জানা থাকলেই আপনি আপনার ব্লগিং লাইফ শুরু করতে পারেন। আর আপনাকে গাইড লাইন দেয়ার জন্য ব্লগিং স্কুলতো আছেই। ব্লগিং জগতে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় হচ্ছে ধৈর্য। ধৈর্য ছাড়া আপনি এখানে উন্নতি করতে পারবেন না। আপনি এক সময় খুবই বিরক্ত হয়ে পরবেন, কিন্তু তখনই আপনাকে আপনার ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হবে। আর আপনি যদি ধৈর্যের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন, তাহলেই আপনি সাফল্য পাবেন।
৩. ব্লগিং এর লাভঃ

এতক্ষণে মনে হয় বুঝে গেছেন ব্লগিং কি? এখন আপনাদের বলছি এটি করে কি লাভ? আপনারা জানেন আপনার লেখা গুলি অন্য কেউ পরে উপকৃত হচ্ছে। আপনি যদি খুবই ভালো ভালো বিষয় সম্পর্কে লিখতে পারেন, তাহলে আপনার ব্লগে প্রচুর পরিমানে ভিসিটর আসবে। আর ভিসিটর আসলেই আপনার লাভ। যত বেশী ভিসিটর আসবে ততই লাভ। এখন আপনাকে প্রচুর পরিমানে ভিসিটর আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। যতদিন আপনি ভালো ভিসিটর না পান, ততদিন আপনাকে বিনামূল্যে কাজ করে যেতে হবে। এতে হতাশার কিছুই নেই। এই শ্রমটুকুই আপনাকে একদিন সাফল্য এনে দিবে।
৪. ব্লগ থেকে আয়

এখন বলি কিভাবে আয় করবেন। ব্লগ থেকে আয়ের বিভিন্ন উপায় আছে, যেমনঃ এফিলেশন, বিজ্ঞাপন প্রদর্শন, স্পন্সর পোস্ট, ইত্যাদি। এখান থেকে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনই সবচেয়ে জনপ্রিয়। ইন্টারনেটে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন সংস্থা আছে, যারা আপনার ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দিবে। বিনিময়ে আপনি কি পাবেন? আপনি পাবেন আপনার কাংখিত আয়। বিজ্ঞাপন প্রদর্শন নিয়ে পরবর্তীতে বিস্তারিত আলচনা করা হবে।
এভাবেই আপনি আপনার ব্লগ থেকে আয় করতে পারবেন।

ব্লগিং শুরু করার আগে আপনাকে বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে। সেগুলি নিয়েই আজকের ক্লাশটি সাজানো হয়েছে।



ব্লগিং সম্পর্কে নিশ্চয় জেনেছেন। এখন ব্লগিং শুরু করার পালা। এই যে ভাই, খারান। এখনি দৌড় মারতেছেন। মনে হচ্ছে দোকান থেকে কিনে নিয়ে আসবেন। আরে ভাই এত সহজ না। ব্লগিং শুরু করার আগে আপনাকে এমনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যেন পরে না আটকে যান। যাই হোক আজকের ক্লাস এখান থেকেই শুরু করছি।
ব্লগিং শুরু করার আগে যা ভাববেনঃ

১. ব্লগিং এ ইনভেস্ট করবেন কিনাঃ

ব্লগিং শুরু করার আগে আপনাকে প্রথমেই ভাবতে হবে ইনভেস্ট করবেন কিনা। ইনভেস্ট বলতে আপনার ব্লগ সাইটটি তৈরির কথা বলা হচ্ছে। আপনি প্রথমে ফ্রি ব্লগ দিয়েও শুরু করতে পারেন। আর যদি প্রথমেই প্রফেশনালদের মত শুরু করতে চান, তাহলে কিছু ইনভেস্ট তো করতে হবেই। ইনভেস্ট করা হবে আপনার ব্লগের জন্য ডোমেইন এবং হস্টিং কেনার জন্য। ডোমেইন এবং হস্টিং সম্পর্কে আমি কিছু বলতে চাই না। আমি শুধু বলব, ব্লগিং শুরু করলে ডোমেইন হস্টিং কিনেই শুরু করা উচিত। সেক্ষেত্রে সব মিলিয়ে আপনার ২ থেকে ৩ হাজার টাকার বেশী খরচ হবে না। আর যদি কেউ মনে করে আমি প্রথমেই ইনভেস্ট করব না, তার জন্যও উপায় আছে।
২. ব্লগিং প্লাটফর্মঃ

দ্বিতীয়ত আপনাকে ভাবতে হবে আপনি কোন প্লাটফর্মে ব্লগ তৈরি করবেন। নিম্নে জনপ্রিয় দুইটি প্লাটফর্ম নিয়ে আলোচনা করা হল।
ওয়ার্ডপ্রেসঃ প্রফেশনাল ব্লগারদের জন্য ওয়ার্ডপ্রেসই বেস্ট। কারন ওয়ার্ডপ্রেসকে ব্লগিং জগতের হিরো বলা হয়। ব্লগিং এ সম্পূর্ণ স্বাধীনতা আপনি ওয়ার্ডপ্রেস থেকেই পেতে পারেন। ওয়ার্ডপ্রেসের সবচেয়ে সুবিধা হল, ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগ তৈরি করতে আপনাকে ওয়েব ডেভেলপিং সম্পর্কে জানতে হবে না। ইন্টারনেট সম্পর্কে ধারনা থাকলেই আপনি ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে একটি সুন্দর ব্লগ তৈরি করতে পারবেন। ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ব্লগ তৈরি করতে হলে আপনাকে ডোমেইন এবং হস্টিং কিনে কাজ করতে হবে।
ব্লগস্পটঃ যারা ফ্রি ব্লগিং করতে চান, তাদের জন্য ব্লগস্পট আশীর্বাদ স্বরূপ। ব্লগস্পট সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগলের একটি সার্ভিস, তাই এর নিরাপত্তা ১০০% । আপনি ব্লগস্পট এর মাধ্যমে খুব সুন্দর একটি ব্লগ সম্পূর্ণ ফ্রিতে তৈরি করে ফেলতে পারেন। ব্লগস্পট দিয়ে ব্লগ তৈরি করলে আপনার এক টাকাও খরচ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
৩. ব্লগিং এর বিষয়ঃ

এখন আপনাকে ভাবতে হবে আপনি কি নিয়ে ব্লগিং করবেন। অনেকে আছেন হুট করে এক বিষয় নিয়ে ব্লগিং শুরু করে দেন। এতে তিনি এক পর্যায়ে গিয়ে থামতে বাধ্য হন। কারন তার জ্ঞানের ঝুলি শেষ। তাই আপনাকে এমন একটি বিষয় বেছে নিতে হবে, যেটা আপনি সবচেয়ে ভালো বুঝেন। ধরুন আপনি ঘুরতে ভালোবাসেন, বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান নিয়ে আপনি ব্লগিং করলেই আপনার ভালো হবে। কারন আপনি সেটা সম্পর্কে জানেন। যদি আপনি একটা দর্শনীয় জায়গায় গেলেন কিন্তু আপনি বেড়াতে ভালোবাসেন না। আপনি কি একটা জায়গা সম্পর্কে জানেন জন্যই সেই বিষয় নিয়ে ব্লগিং শুরু করবেন? এটা থবে আপনার ভুল। কারন আপনি ভ্রমন সম্পর্কে আর কিছুই জানেন না। এজন্যই আপনাকে এমন একটা বিষয় বেছে নিতে হবে, যার সম্পর্কে আপনার বিস্তর জ্ঞান রয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও কিছু জানার নিশ্চয়তা আছে।
৪. সময় দেয়ার নিশ্চয়তাঃ

অনেকেই আছেন শখের বশে ব্লগিং শুরু করেন, কিন্তু পরে সময় দিতে পারেন না। এতে তার কোন লাভ হবে না। কারন হাতে প্রচুর সময় থাকলেই ব্লগিং করা উচিৎ। সাফল্য পাওয়ার পরে বেশী সময় না দিলেও চলে। তাই আপনাকে ব্লগিং এ সময় দেয়ার প্রতিজ্ঞা করেই ব্লগিং এ নামতে হবে। নতুবা আপনি খুব তাড়াতাড়িই ব্লগিং থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পরবেন।

Releted Content

ব্লগিং ? আমাকে কি জানতে হবে? ব্লগিং করে লাভ কি?
4/ 5
By